রেডিওলজির একটি বিশেষ ক্ষেত্র হচ্ছে ইনটারভেনশনাল রেডিওলজি। এ পদ্ধতিতে এমআরআই, সিটিস্ক্যান, আল্ট্রাসাউন্ড এবং ফ্লোরোস্কোপির মাধ্যমে পাওয়া মেডিকেল ইমেজ ব্যবহার করে যতদূর সম্ভব কাটাছেঁড়া কম করে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়। টিউমার অপসারণ, বায়োপসির জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ অথবা টিউব ও সূ² যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দেহের অভ্যন্তরে বা ধমনিতে স্টেন্ট স্থাপন করতে একজন ইনটারভেনশনাল রেডিওলজিস্টকে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এ পদ্ধতিতে রেডিওলজিস্ট পেটে ছোটো ছোটো কয়েকটি ছিদ্র করে তার মাধ্যমে শরীরে সূচ ও ক্যাথেটার প্রবেশ করান এবং এর জন্য মেডিকেল ইমেজের সাহায্য নিয়ে থাকেন। ব্যাপারটি সহজ মনে হলেও, শুধুমাত্র কিছু ছবি দেখে শরীরের অভ্যন্তরে যন্ত্রপাতি চালনা করা বা তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার ব্যাপারটি বেশ জটিল। এক্ষেত্রে চিকিৎসককে যতখানি দক্ষ হতে হয়, ঠিক ততখানিই সতর্ক থাকতে হয়।
ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি কেন করা হয়ে থাকে
প্রথাগত সার্জারির তুলনায় ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি বেশ কম সময়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। অপরদিকে এ পদ্ধতিতে রোগীর শারীরিক কষ্ট যেমন কম হয় তেমনি সুস্থ হতেও তুলনামূলক কম সময় লাগে। তাই রোগীকে খুব বেশিদিন হাসপাতালে থাকার দরকার হয় না। কমে যায় চিকিৎসাখরচ। অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি করা হয়ে থাকে।
ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি পদ্ধতির কয়েকটি উদাহরণ:
- এনজিওপ্লাস্টি- এর মাধ্যমে রক্তনালীর ব্লক নিরাময় করা হয়।
- স্টেন্টিং- বিশেষ এক ধরনের টিউব ব্যবহার করে সরু ও দুর্বল হয়ে যাওয়া ধমনীর চিকিৎসা করা হয়।
- থ্রোম্বোলাইসিস- এ পদ্ধতিতে ব্লাড ক্লটস ঠিক করা হয়।
- এম্বোলাইজেশন- ক্যানসার আক্রান্ত কোষে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করা হয় ।
- রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এব্লাশন- নার্ভের সমস্যা দূর করতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
- বায়োপসি- ক্যানসার নির্ণয় করতে বায়োপসি করা হয়ে থাকে।
প্রথাগত সার্জারির তুলনায় ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি কম ঝুঁকিসম্পন্ন, কম কষ্টকর এবং বেশ সাশ্রয়ী।
এ পদ্ধতিতে রোগীর শারীরিক কষ্ট যেমন কম হয় তেমনি সুস্থ হতেও তুলনামূলক কম সময় লাগে।
ডা. শারমিন আখতার রুপা
সহযোগী অধ্যাপক
বিভাগীয় প্রধান, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং
পপুলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল
ধানমন্ডি, ঢাকা