কিডনির সুস্থতায়
দেহের যে কোনো অঙ্গের গোলযোগ নানা উপসর্গের মধ্য দিয়ে শরীর জানান দিতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন রোগীর কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। প্রাথমিকভাবে খাবারে অনীহা, বমি বমি ভাব, প্রস্রাবের পরিমাণে তারতম্য, ঝিমুনি, ক্লান্তি প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেগুলোকে রোগী সাধারণ ক্লান্তি বা দূর্বলতাজনিত বলে এড়িয়ে যান, চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ ধরা পড়লে জটিল বা ব্যয়বহুল চিকিৎসা এড়ানো যেতে পারে সহজেই।
- শিশুদের গলাব্যথা, চর্মরোগ প্রভৃতির দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। এসব রোগ থেকেও কিডনির প্রদাহ হতে পারে
- ডায়রিয়া, বমি, রক্ত-আমাশয়, পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে, কারণ এসব থেকে কিডনি বিকল হতে পারে
- প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে
- কিডনি ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
- নিয়মিত রক্ত চাপ মেপে দেখা এবং নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এটি কিডনি ভালো রাখার জন্য জরুরি
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত মাছ-মাংস-ডিম বা হাই-প্রোটিন ডায়েট কিডনির জন্য ক্ষতিকর
- ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে
- রক্তের সুগার নিয়মিত নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
- চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক প্রভৃতি ওষুধ খাওয়া যাবে না
হৃদস্বাস্থ্যের ভালো মন্দ
ধূমপান, উচ্চরক্ত চাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মত বিষয়গুলো হৃদরোগের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। তবে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিত্যদিনের অতি সাধারণ কিছু ঘটনা হৃদস্বাস্থ্যে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে।
ঘুম : হৃদরোগে ঘুমের প্রভাব দেখতে দীর্ঘদিন ধরে একটি গবেষনা চালানো হয়। এই গবেষনায় ১৫ হাজার মানুষকে ১৪ বছর ধরে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায়, যাদের জীবনযাত্রা খুব স্বাভাবিক এবং যারা নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর শঙ্কা প্রায় ৬৭ শতাংশ কম। অন্যদিকে যাদের ঘুমের পরিমাণ ৭ ঘণ্টা বা তার
থেকে বেশি ছিল, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর শঙ্কা কমে যায় ৮৩ শতাংশ। তাই নিয়মিত আরাম করে ঘুমান। হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে।
সুখ : আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, সুখী মানুষেরা হৃদরোগে কম ভোগেন। পঁচিশ বছর ধরে এই গবেষণায় দেখা গেছে, সুখী ও আশাবাদী মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। অন্যদিকে যারা অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকেন, তাদের হৃদস্বাস্থ্যও ঝুঁকিতে থাকে।
বায়ু দূষণ : বায়ু দূষণ ব্যাপকভাবে হৃদস্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপান, গাড়ির ধোয়া অত্যন্ত ক্ষতিকর হৃদপিন্ডের জন্য। যারা হৃদরোগী এবং যারা নিজের হৃদপিন্ডকে দীর্ঘদিন সুস্থ্য দেখতে চান। অবশ্যই তারা দূষিত বায়ু এড়িয়ে চলবেন।
মানসিক চাপ : দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ দেহে করটিসোল এবং এড্রেনালিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যেটা রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে রক্তনালী শক্ত করে ফেলে। যেটি হৃদপিন্ডের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিজেকে নির্ভার রাখার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ দূরে রাখুন।
রিডার্ষ্ট ডাইজেষ্ট অবলম্বনে
ডা. সিদ্ধার্থ দেব মজুমদার
ব্যবস্থাপক
মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স
ল্যাবএইড হাসপাতাল