ক্যানসার প্রতিরোধে খাদ্যাভাস

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস ক্যানসার প্রতিরোধের প্রধান শর্ত। দিন দিন অনিয়ম, অবহেলা, অযত্নে আমাদের শরীরে ক্যানসারের মতো ভয়ংকর রোগের বীজ বপন করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, যথাযথ জীবনযাপন ও খাদ্যভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে ফেলা যায়। ক্ষতিকর খাবার পরিহার করে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমনকিছু খাবার রাখা জরুরি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

ক্যানসার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে যেসব খাবার

খাদ্যদ্রব্যে বিদ্যমান বিভিন্ন পদার্থ নানাবিধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে টিউমার সৃষ্টিতে বাধা সৃষ্টি করলেও আক্রান্ত হওয়ার পর এটি ক্যানসার নিরাময়ে বা প্রতিকারে খুব একটা ভ‚মিকা রাখে না। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ক্যনসারের ঝুঁকি বহুলাংশে কমাতে সক্ষম।

  • শাক-সবজি; যেমন-গাঁজর, ব্রোকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রভৃতি।
  • ফলমূল; যেমন- আপেল, কমলালেবু, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফলমূল।
  • এন্টি অক্সিডেন্ট ও ফটোকেমিকেল সমৃদ্ধ খাবার।
  • ক্যানসার কোষের বিস্তার রোধে তিসি বীজ বেশ ফলপ্রসূ একটি খাবার।
  • দারুচিনি, হলুদ আদা ও রসুনে রয়েছে ক্যানসার-নিরোধী উপাদান।

  • কলাই, মটরশুঁটি কোলারেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • শাক-সবজি ও ফলমূলের পাশাপাশি আমিষ জাতীয় খাবার, যেমন -মাছ, মাংস।
  • নিয়মিত বাদাম খাওয়াও ক্যানসার প্রতিরোধী খাদ্যাভ্যাসের অংশ।
  • অলিভ ওয়েল, রসুন প্রভৃতি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • ক্যানসার প্রতিরোধে গ্রিন টি বেশ উপকা
  • যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

    খাদ্যাভ্যাস যেমন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভ‚মিকা রাখে একইভাবে এই খাদ্যাভ্যাসই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। তাই কী ধরনের খাবার খেতে হবে এটি জানার পাশাপাশি কী ধরনের খাবার বর্জন করতে হবে কিংবা পরিমিত মাত্রায় খেতে হবে এটি জানাও গুরুত্বপূর্ণ। ঝুঁকিমুক্ত থাকতে বর্জন করতে হবে এমন কিছু খাবারের তালিকা নিচে দেওয়া হলো।

    • ধূমপান ও মদ্যপান।
    • যেকোনো ধরনের তামাকজাত দ্রব্য।
    • চিনি ও শর্করা জাতীয় খাবার, যেমন- পেস্ট্রি, মিষ্টি, চকলেট। যেকোনো ধরনের ফাস্টফুড।
    • কোমলপানীয়।
    • মেয়াদোর্ত্তীর্ণ, পচা, বাসি মানহীন খাবার।
    • উচ্চতাপে রান্না করা খাবার। যেমন- গ্রিল, বার্বিকিউ।
    • অতিরিক্ত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
    • প্লাস্টিক বা পলিথিনে মুড়ে গরম করা খাবার।
    • লাল মাংস, যেমন-গরু বা খাসির মাংস।
    • প্রক্রিয়াজাত খাবার।
    • অতিরিক্ত তেল ও মসলাদার খাবার।

    প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত

    সকালের নাস্তা
    সকালের নাস্তায় সতেজ ফলমূল, বাদাম, অল্প চিনিযুক্ত খাবার থাকতে পারে।

    দুপুরের খাবার
    দুপুরের খাবারের সঙ্গে মাছ ডাল, মটরশুঁটি, লেটুস, টমেটো, গাঁজর ও বিভিন্ন শাক সবজি খাওয়া ভালো।

    বিকালের নাস্তা
    বৈকালিক হালকা নাস্তা কলা, আপেল, ক্ষীরা বা বাদাম দিয়ে করা যেতে পারে।

    রাতের খাবার
    মাছ, শাক সবজি, সেদ্ধ আলু যুক্ত করে নিন রাতের খাবারের তালিকায়।


    ফাহমিদা হাসেম
    সিনিয়র পুষ্টিবিদ
    ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল

    LinkedIn
    Share
    WhatsApp