পিত্ত পাথুরি অসুখ ও আধুনিক চিকিৎসা

-অধ্যাপক ডা. এম. খাদেমুল ইসলাম

পিত্ত পাথুরি অসুখ বর্তমান সময়ে একটি অতি পরিচিত সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। গত তিন দশকের মধ্যে, বিশেষ করে রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার পিত্ত পাথুরি শনাক্তকরণকে অতীব সহজ করে দিয়েছে।

পিত্ত পাথুরি অসুখ কী

পিত্তথলি বা পিত্তনালির মধ্যে পাথর তৈরি হওয়া কিংবা পাথরের উপস্থিতি এবং তৎসঙ্গে কিছু উপসর্গের সম্মিলিত অবস্থাকেই পিত্ত পাথুরি অসুখ বলা হয়। কোনো রকম উপসর্গ ছাড়া কিংবা তীব্র পেটে ব্যথা নিয়ে পিত্ত পাথুরির রোগী হাসপাতালে আসতে পারেন। শরীরে বেশ কিছু অঙ্গে পাথুরি অসুখ হয়ে থাকে। তার মধ্যে পিত্ত পাথুরি অসুখ অন্যতম।

কারা পিত্ত পাথুরি অসুখে আক্রান্ত হন

একসময় এমন কথা চালু ছিল যে, চল্লিশ কিংবা চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের ফর্সা, স্থূলকায় মহিলা, যিনি কয়েক সন্তানের মা—এমন মহিলারাই সাধারণত পিত্ত পাথুরি অসুখে ভুগে থাকেন। বর্তমানে এ কথার বাস্তবতা খুব একটা নেই। তবে এটা ঠিক যে, মহিলাদের মধ্যেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এখন প্রচুর যুবা বয়সের পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে পিত্ত পাথুরির সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকে। একসময় মূলত পাশ্চাত্যের অসুখ মনে করা হলেও বর্তমানে বিশ্বজুড়েই এ রোগ বেড়ে গেছে। বিশ্বায়নের প্রভাব ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন সম্ভবত এর কারণ। আবার শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও পিত্ত পাথুরি অসুখ দেখা যায়। তবে এক্ষেত্রে পিত্তথলির জন্মগত ত্রুটি কিংবা লোহিতকণিকা ভেঙে যাওয়ার কারণে জন্ডিস পাথর সৃষ্টি হওয়ার জন্য দায়ী থাকে।

পিত্ত পাথুরি অসুখের কারণ কী

পিত্ত পাথরের সব উপাদান পিত্তের মধ্যেই বিদ্যমান। এর অন্যতম উপাদান কোলেস্টেরল, যাকে পিত্তের মধ্যে দ্রবীভূত করে রাখে পিত্ত লবণ। স্বাভাবিক অবস্থায় এই দুইয়ের আনুপাতিক হার একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে। কোনো কারণে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে কিংবা পিত্ত লবণের পরিমাণ কমে গেলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল দ্রবীভূত অবস্থা থেকে বেরিয়ে দানা বাঁধে এবং ক্রমান্বয়ে পাথরে পরিণত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ক্যালসিয়াম, ফসফেট ও বিলিরুবিন। অনেকসময় পিত্তথলিতে সংক্রমণ হয়ে ব্যাকটেরিয়া ও পিত্তথলির আন্ত-আবরণীর স্খলিত কোষ একত্র হয়ে একটি দানাদার কণার সৃষ্টি হয়, যাকে কেন্দ্র করে কোলেস্টেরল জমতে থাকে এবং এভাবে ধীরে ধীরে পাথরের সৃষ্টি হয়।

পিত্ত পাথুরি অসুখ ও আধুনিক চিকিৎসা

তাছাড়া দীর্ঘসময় পিত্তথলিতে পিত্ত জমা থাকলে কিংবা অন্ত্রের মধ্যে পিত্ত নিঃসরণ শ্লথ হলে, যেমনটা গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকে, তখন পাথর সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। সম্ভবত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই কারণটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। যদিও কোলেস্টেরল পিত্ত পাথরের অন্যতম উপাদান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে। তবে প্রায়শই দেখা যায়, যকৃতের মধ্যে চর্বির আধিক্য ও দীর্ঘমেয়াদি যকৃতের প্রদাহ রোগীদের পিত্তের উপাদানে পরিবর্তনের কারণে পিত্ত পাথুরি অসুখ হয়ে থাকে।

দীর্ঘদিন পিত্তথলিতে পাথর থাকলে
ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

পিত্ত পাথুরি অসুখের উপসর্গ

অনেকের ক্ষেত্রে আপাত কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। যেকোনো কারণে পেটের আল্টাসনোগ্রাফির সময় পিত্ত পাথর চিহ্নিত হয়। অনেক রোগী ক্ষুধামান্দ্য, অল্প খাবারের পর পেট ভর্তি হয়ে যাওয়ার অনুভূতি, পেটে অতিরিক্ত গ্যাসের জন্য অস্বস্তি ইত্যাদি উপসর্গের অভিযোগ করেন। তবে এসব উপসর্গের জন্য পিত্তথলিকে এককভাবে দায়ী করা ঠিক নয়। হঠাৎ করে মাঝারি থেকে তীব্র পেটে ব্যথা, বিশেষ করে ওপর পেটের ডান দিকে ব্যথা ও তৎসঙ্গে বমি কিংবা বমিভাব এবং অসুস্থ বোধ করা পিত্ত পাথুরির জন্য হয়ে থাকে। এই ব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পর হঠাৎ করে ব্যথা চলে গেলে এ অবস্থাকে বলা হয় ‘স্বল্পমেয়াদি তীব্র পিত্তবেদনা’। পিত্ত পাথর পিত্তথলির বহির্গমন পথে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে পিত্তথলি সেটাকে স্থানচ্যূত করার জন্য যে চাপ সৃষ্টি করে সেটিই প্রতিফলিত হয় তীব্র ব্যথা হিসেবে। পাথর স্থানচ্যূত হয়ে বহির্গমন পথ খোলাসা হলে তাৎক্ষণিক ব্যথা চলে যায়। পাথর স্থানচ্যূত না হয়ে স্থায়ীভাবে আটকে গেলে পিত্তথলি ফুলে যায়। পীড়িত পিত্তথলিতে সংক্রমণ ঘটে প্রদাহ সৃষ্টি করে। একে বলা হয় ‘আকস্মিক পিত্তপ্রদাহ’। এক্ষেত্রে তীব্র ব্যথা পরিবর্তিত হয়ে মাঝারি রকমের স্থায়ী ব্যথায় রূপ নেয়। এ অবস্থায় রোগীর পেট পরীক্ষা করে ডান দিকে উপর পেটের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ও মাংশপেশির দৃঢ়তা পরিলক্ষিত হয়। কয়েক দফায় এ রকম উপসর্গ হলে দীর্ঘমেয়াদি পিত্তথলির প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এ সময় জ্বর, বমি কিংবা বমিভাব এবং হালকা জন্ডিস দেখা দিতে পারে।

পিত্ত পাথুরি অসুখের জটিলতা

পিত্ত পাথুরি অসুখ ও আধুনিক চিকিৎসা

১. স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—উভয় রকমের জটিলতা হতে পারে। অ্যাকিউট কোলেসিস্টাইটিসে আক্রান্ত হলে কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ ও প্রদাহ এত মারাত্মক আকার ধারণ করে যে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিক এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের বেলায় এই সম্ভাবনা বেশি। এক্ষেত্রে পিত্তথলির ভেতরে পুঁজের সৃষ্টি হয় (এমপায়োমা গলব্লাডার)। এমনকি পিত্তথলিতে পচন ধরতে পারে। পিত্তনালিতে পাথর থাকলে পিত্ত নিঃসরণে বাধার কারণে প্রতিবন্ধক জন্ডিস এবং পিত্তনালির প্রদাহ হয়ে থাকে। পিত্তনালির পাথর পিত্তনালি ও অগ্ন্যাশয়ের নালির সংযোগস্থলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে অগ্ন্যাশয়ে তীব্র প্রদাহের মতো জটিল অসুখের সৃষ্টি হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ের তীব্র প্রদাহ নিয়ে পিত্ত পাথরের রোগী প্রথমবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসেন—যা একটি মারাত্মক ব্যাধি।

২. দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো পিত্তথলির ক্যানসার। অর্থাৎ দীর্ঘদিন পিত্তথলিতে পাথরের উপস্থিতি পিত্তথলির মধ্যে ক্রমান্বয়ে কিছু পরিবর্তন আনে যা একসময় ক্যানসারে রূপ নেয়। আমার ৪৩ বছরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এমন একজন পিত্তথলির ক্যানসারের রোগী পাইনি যার ক্যানসারের সঙ্গে পাথরের উপস্থিতি ছিল না।

রোগ নির্ণয়

আধুনিক মেডিকেল ইমেজিং বিশেষত আল্ট্রাসনোগ্রাফি পিত্ত পাথুরি শনাক্তকরণে অত্যন্ত সময়োপযোগী পরীক্ষা। পিত্ত পাথুরি সমস্যা সন্দেহ হলেই পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা অত্যন্ত যৌক্তিক। পিত্ত পাথুরি রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সিটি স্ক্যান কিংবা এমআরআইয়ের চেয়েও অনেকসময় শ্রেয় বলে বিবেচিত হয়।

পিত্ত পাথুরি অসুখ কী

পিত্তথলি বা পিত্তনালির মধ্যে পাথর তৈরি হওয়া কিংবা পাথরের উপস্থিতি এবং তৎসঙ্গে কিছু উপসর্গের সম্মিলিত অবস্থাকেই পিত্ত পাথুরি অসুখ বলা হয়। কোনো রকম উপসর্গ ছাড়া কিংবা তীব্র পেটে ব্যথা নিয়ে পিত্ত পাথুরির রোগী হাসপাতালে আসতে পারেন। শরীরে বেশ কিছু অঙ্গে পাথুরি অসুখ হয়ে থাকে। তার মধ্যে পিত্ত পাথুরি অসুখ অন্যতম।

চিকিৎসা

নিশ্চিতভাবে পিত্ত পাথুরি অসুখ নির্ণিত হলে সর্বজনস্বীকৃত চিকিৎসা হলো, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাথরসহ পিত্তথলির অপসারণ। বিবেচ্য বিষয় হলো, কখন ও কী পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপসারণ করা শ্রেয়। সাধারণত আকিউট কোলেসিস্টাইটিস হলে জরুরি অবস্থায় ওষুধ প্রয়োগে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং শতকরা ৯৫ জনেরও বেশি রোগী সেরে ওঠেন। ৪-৬ সপ্তাহ পর আধুনিক ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতিতে সহজেই পিত্তথলির অপসারণ করা যায়। ওষুধ চিকিৎসায় উন্নতি না হলে কিংবা ওপরে উল্লিখিত জটিলতা দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করতে হয়। শল্যবিদ অভিজ্ঞ হলে এক্ষেত্রেও ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। তবে রোগী গুরুতর অসুস্থ হলে সনাতন পদ্ধতিতে পেট কেটে অস্ত্রোপচার করাই শ্রেয়। বর্তমানে জটিলতাবিহীন রোগীদের ক্ষেত্রে ‘ল্যাপারোস্কপিক কলিসিসটেকটমি’ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত পদ্ধতি। এতে পেট কাটার জটিলতা নেই। কয়েকটি ছোটো ছিদ্র করে তার একটির মধ্য দিয়ে টেলিস্কোপ ঢুকিয়ে সংযুক্ত সিসিডি ক্যামেরার মাধ্যমে টেলিভিশনের পর্দায় ছবি দেখে অন্য ছিদ্রপথে বিশেষ ধরনের পাথরসহ পিত্তথলি অপসারণ করা হয়। একজন দক্ষ শল্যবিদ মূল অপারেশনপর্ব ২০-২৫ মিনিটে সমাধা করতে পারেন।

যেহেতু পেটের কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করা হয় না এবং বাইরের পরিবেশে উন্মুক্ত করা হয় না তাই অস্ত্রোপচারের তিন ঘণ্টা পরেই রোগীকে মুখে খাবার দেওয়া যায় এবং ছিদ্র স্থানগুলোতে বাহ্যিক কোনো সেলাই দিতে হয় না। ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতিতে সকালে অস্ত্রোপচার করার পর বিকেলেই একজন রোগী হাসপাতাল ত্যাগ করতে পারেন এবং কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরতে পারেন। যদি একইসঙ্গে পিত্তথলি ও পিত্তনালিতে পাথর থাকে সেক্ষেত্রে পেট না কেটেই আধুনিক পদ্ধতিতে উভয় সমস্যার সমাধান করা হয়। প্রথমত, গলা দিয়ে এন্ডোস্কোপ ঢুকিয়ে ইআরসিপির মাধ্যমে পিত্তনালির পাথর অপসারণ করে একই সময়ে অথবা দুয়েকদিন পর ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে পিত্তথলি অপসারণ করা হয়। কাজেই সনাতন ওপেন কলিসিসটেকটমি এখন কালেভদ্রে করার প্রয়োজন পড়ে এবং ল্যাপারোস্কপিক কলিসিসটেকটমি এখন বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে ‘স্বর্ণমান’ (গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড) হিসেবে বিশ্বজুড়ে বিবেচিত।

উপসর্গবিহীন পিত্ত পাথুরির জন্য করণীয়

অপ্রাসঙ্গিকভাবে নির্ণিত পিত্ত পাথুরি যা উপসর্গবিহীন তার ক্ষেত্রে কী করণীয় তা নিয়ে অনেকে পরামর্শ চেয়ে থাকেন। কেবল অতীব বৃদ্ধ, বার্ধক্যজনিত সমস্যায় আক্রান্ত এবং বেহুশ ও অস্ত্রোপচার করা ঝুঁকিপূর্ণ—এরূপ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার না করাই ভালো। কিন্তু পিত্তথলিতে ছোটো ছোটো অনেক পাথর, ৪০ বছরের কম বয়স, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত—এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে পিত্তথলির অপসারণ অবশ্যই জরুরি। কেননা, এ ধরনের ব্যক্তিদের পিত্ত পাথুরির জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি।

সন্তান ধারণে সক্ষম মহিলাদের, বিশেষত যারা পরবর্তী সন্তান গ্রহণে আগ্রহী তাদের অবশ্যই পরবর্তী গর্ভধারণের আগেই অস্ত্রোপচার করে পিত্তথলির অপসারণ করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। না হলে গর্ভকালে সমস্যা হওয়াই স্বাভাবিক, যা মা কিংবা গর্ভজাত সন্তান উভয়ের জন্যই হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে।

গর্ভকালীন পিত্ত পাথুরি সম্পর্কিত সমস্যা

গর্ভধারণকালীন উপসর্গ প্রণয়নকারী পিত্ত পাথুরি কিংবা গর্ভাবস্থায় পর্যবেক্ষণের সময় নির্ণিত পিত্ত পাথুরি অনেকসময় রোগী এবং চিকিৎসক উভয়কে চিন্তিত করে ফেলে। গর্ভকালে পিত্ত পাথুরির প্রদাহ দেখা দিলে অবশ্যই ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে হবে। তবে এমন ওষুধ বেছে নিতে হবে যা গর্ভজাত শিশুর কোনো ক্ষতি করে না। গর্ভাবস্থা ২০ সপ্তাহের মধ্যে হলে ল্যাপারোস্কপিক কলিসিসটেকটমি করাই শ্রেয়। প্রথম আট সপ্তাহের মধ্যে চিহ্নিত হলে ৮-১২ সপ্তাহের মধ্যে অস্ত্রোপচার করা নিরাপদ। ২০ সপ্তাহের পরে চিহ্নিত হলে এবং উপসর্গ না থাকলে পর্যবেক্ষণ ও তেলজাতীয় খাবার পরিহার করা উত্তম। কিন্তু ২০ সপ্তাহের পর উপসর্গ সৃষ্টিকারী পিত্ত পাথর ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত না হলে সনাতন পদ্ধতিতে পেট কেটে অস্ত্রোপচার করাই নিরাপদ। যদিও কিছু ক্ষেত্রে গর্ভপাত কিংবা জরায়ুর মধ্যে বাচ্চা মারা যেতে পারে।

উপসংহার

পিত্ত পাথুরির আধুনিক চিকিৎসা যেহেতু সহজ ও নিরাপদ তাই এই সমস্যা চিহ্নিত হলে বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে পিত্তথলির অপসারণ সুবিধাজনক সময়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শল্যবিদ এবং ভালো হাসপাতালে করে নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত ও বুদ্ধিমানের কাজ।

পুরো ম্যাগাজিনটি পড়তে: এখানে ক্লিক করুন


পিত্ত পাথুরি অসুখ ও আধুনিক চিকিৎসা

অধ্যাপক ডা. এম. খাদেমুল ইসলাম

এফএসিএস, এফআইসিএস, এফআরসিএস (গ্লাসগো)
ডিপ-এম এড (ইউকে), এফসিপিএস, এমবিবিএস,
এফএএসসিআরএস (ইউএসএ) এমইএলএসএ (সিঙ্গাপুর)
প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সার্জারি বিভাগ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা।
চিফ, জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি বিভাগ
ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল।

LinkedIn
Share
WhatsApp